বাংলাখবর

থানায় পাঠানো হলো তারেক-জোবাইদার সাজা পরোয়ানা

বাংলা খবর ঢাকা : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছর ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সম্প্রতি এ রায় হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাসহ সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

জানা যায়, গত ১০ আগস্ট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামানের আদালত থেকে রাজধানীর ভাষানটেক থানার ৬, শহীদ মইনুল রোডের বাড়ির ঠিকানায় তারেক-জোবায়দার পরোয়ানা পাঠানো হয়। এ পরোয়ানা তামিলের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট থানার।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান বলেন, জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে জারি করা সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা ভাষানটেক থানায় পাঠানো হয়েছে। এ পরোয়ানা তামিলের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট থানার।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সেরেস্তাদার রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আদালত থেকে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে জারি করা সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করে তা তামিল করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠিয়েছি।

এর আগে গত ২ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে দুদক আইনের ২৬(২) ধারায় তারেক রহমানের তিন বছর ও ২৭(১) ধারায় ছয় বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। এছাড়া দুদক আইনের ২৭ (১) ধারায় জোবাইদা রহমানের তিন বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তারেক রহমানকে তিন কোটি টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাস সাজা ভোগ করতে হবে।
অন্যদিকে জোবাইদা রহমানকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাস সাজা ভোগ করতে হবে। একই সঙ্গে তারেক-জোবাইদা দম্পতির অপ্রদর্শিত সম্পদ হিসেবে দুই কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে চার মামলায় তারেক রহমানের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা চলমান। তবে জোবাইদার এটি প্রথম ও একমাত্র মামলার রায় বলে জানান বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।

মুদ্রা পাচারের মামলায় ২০১৩ সালে তারেক রহমানকে প্রথমে খালাস দেন ঢাকার আদালত। তবে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলের পর হাইকোর্টের রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তার পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে তারেককে কারাদণ্ড দেন আদালত।

এ মামলায় খালেদা জিয়ার হয় পাঁচ বছর কারাদণ্ড, তারেকের হয় ১০ বছর। পরে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার রায়ে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের দুই মামলার প্রতিটিতে কয়েকটি ধারায় তাকে তিনবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি বিস্ফোরক আইনের আরেকটি ধারায় তার কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয় ২০ বছর। তবে সবগুলো সাজা একসঙ্গে কার্যকরের উল্লেখ থাকায় তারেককে যাবজ্জীবন সাজা খাটার বিষয়টি রায়ে উল্লেখ করা হয়।

সবশেষ ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগে নড়াইলে দায়ের হওয়া মানহানি মামলায় তারেক রহমানকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে তারেক-জোবাইদার মামলার রায় ঘোষণার জন্য ২ আগস্ট দিন ধার্য করেন। এ মামলায় ৫৬ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ৪২ জন সাক্ষ্য দেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় তারেক ও জোবাইদার বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলাটি করেন দুদকের উপ-পরিচালক জহিরুল হুদা। এতে তাদের বিরুদ্ধে ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া মামলায় আসামি করা হয় তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুকে।

এরপর ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম। এ মামলা থেকে সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এর আগে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বর্তমানে তারা পলাতক। চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল তারেকের বিরুদ্ধে দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। আর জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে তারেক রহমানকে সহযোগিতার অভিযোগে ১০৯ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন।
 

এই বিভাগের আরও খবর

প্যাট্রিক কেনেডির অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু
প্যাট্রিক কেনেডির অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু

প্যাট্রিক কেনেডির অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু

লন্ডনে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানালেন তারেক রহমান
লন্ডনে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানালেন তারেক রহমান

লন্ডনে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানালেন তারেক রহমান

বিমানবন্দরের পথে খালেদা জিয়া, রাস্তায় নেতাকর্মীদের ঢল
বিমানবন্দরের পথে খালেদা জিয়া, রাস্তায় নেতাকর্মীদের ঢল

বিমানবন্দরের পথে খালেদা জিয়া, রাস্তায় নেতাকর্মীদের ঢল

লন্ডনে খালেদা জিয়াকে দেওয়া হবে ভিআইপি প্রটোকল
লন্ডনে খালেদা জিয়াকে দেওয়া হবে ভিআইপি প্রটোকল

লন্ডনে খালেদা জিয়াকে দেওয়া হবে ভিআইপি প্রটোকল

দীর্ঘ ৭ বছর পর দেখা হবে মা-ছেলের
দীর্ঘ ৭ বছর পর দেখা হবে মা-ছেলের

দীর্ঘ ৭ বছর পর দেখা হবে মা-ছেলের

ছাত্রদের উদ্দেশে যা বললেন মির্জা ফখরুল
ছাত্রদের উদ্দেশে যা বললেন মির্জা ফখরুল

ছাত্রদের উদ্দেশে যা বললেন মির্জা ফখরুল

গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ২৮০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে: মির্জা ফখরুল
গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ২৮০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে: মির্জা ফখরুল

গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ২৮০ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে: মির্জা ফখরুল

‘গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ই প্রয়োজন’
‘গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ই প্রয়োজন’

‘গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ই প্রয়োজন’

৫ আগস্টের পর ইসলামী ব্যাংকগুলো দখল করেছে একটি রাজনৈতিক দল: রিজভী
৫ আগস্টের পর ইসলামী ব্যাংকগুলো দখল করেছে একটি রাজনৈতিক দল: রিজভী

৫ আগস্টের পর ইসলামী ব্যাংকগুলো দখল করেছে একটি রাজনৈতিক দল: রিজভী

খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের নির্বাচনে অংশ নিতে আইনি বাধা নেই
খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের নির্বাচনে অংশ নিতে আইনি বাধা নেই

খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের নির্বাচনে অংশ নিতে আইনি বাধা নেই

সবচেয়ে বিতর্কিত ফাইলগুলো পুড়ে গেছে: রিজভী
সবচেয়ে বিতর্কিত ফাইলগুলো পুড়ে গেছে: রিজভী

সবচেয়ে বিতর্কিত ফাইলগুলো পুড়ে গেছে: রিজভী

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে সরকারের বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়া অস্বাভাবিক নয়: ফখরুল
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে সরকারের বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়া অস্বাভাবিক নয়: ফখরুল

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডে সরকারের বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়া অস্বাভাবিক নয়: ফখরুল