বাংলাখবর

উদ্বেগজনক ডেঙ্গু পরিস্থিতি

সম্পাদকীয় : ডেঙ্গুর ভয়াবহতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। শনিবার ডেঙ্গুতে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত ২৩ বছরের মধ্যে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৩৫২ জন। এর আগে গত ১৯ জুলাই ডেঙ্গুতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ধারণা করা হয়েছিল, আগস্টের পর ধীরে ধীরে সহনীয় হয়ে আসবে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দেশে দিন দিন ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে, যা আগামী নভেম্বরে আরও ভয়ানক রূপ নিতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত বছর দেশে ডেঙ্গুর পিক সিজন ছিল অক্টোবর ও নভেম্বরে। কাজেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনই সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া দরকার। দেশে ডেঙ্গুর লার্ভার উপস্থিতির যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা উদ্বেগজনক। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলোকে কার্যকর করার জন্যও উদ্যোগ নিতে হবে। এ বছর জুনের পর থেকেই দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। দুই দশক ধরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ, রোগী ব্যবস্থাপনা এবং এডিস মশা নির্মূলে কাজ করছে সরকার। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মশা নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা এবং রোগী ব্যবস্থাপনায় ঘাটতির কারণে রোগটি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। এ বছর এডিস শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, সেটি ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ। এবার ঢাকার বাইরে আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। বস্তুত ঢাকার বাইরের রোগী বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোয় চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এজন্য মশা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ঢাকার বাইরে জেলা, উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসাব্যয় কমাতেও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

জানা যায়, এ বছর ব্রাজিলে ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার শূন্য দশমিক শূন্য ৭। মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাবে দেশটিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে মারা গেছেন ৫৪ জন। দেশটিতে মৃত্যুহার শূন্য দশমিক শূন্য ৭। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ভারতেও ডেঙ্গুর সংক্রমণ একটু বেশি। কিন্তু এ তিন দেশেও মৃত্যুহার বাংলাদেশের চেয়ে কম। এসব দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, চলতি বছর আগস্টের শেষ পর্যন্ত মৃত্যুহার বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ রোগী হাসপাতালে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছেন। এ থেকে এটাই স্পষ্ট হয়, যেসব ডেঙ্গু রোগী মারা যাচ্ছেন, তারা দেরি করে হাসপাতালে আসছেন। যখন হাসপাতালে আসছেন, তখন চিকিৎসকদের বিশেষ কিছু করার থাকছে না।

উদ্বেগজনক বিষয় হলো, প্রতিকূল পরিবেশেও এডিস মশা বেঁচে থাকার সক্ষমতা অর্জন করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এডিসের উৎপাত কতটা বেড়েছে তা বহুল আলোচিত। অপরিকল্পিত নগরায়ণসহ বিভিন্ন কারণে এডিসের উৎপাত বেড়েছে। জানা যায়, এডিস মশা দেশের প্রতিকূল জলবায়ুর সঙ্গে টিকে থাকার সক্ষমতাও অর্জন করতে শুরু করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এডিসের উৎপাত শুধু বর্ষাকালে নয়, বছরজুড়েই থাকবে। কাজেই ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে সারা বছর মশক নিধনসহ অন্যান্য কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। যেভাবেই হোক ডেঙ্গুর উৎস পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

জনপ্রশাসনের চরিত্র কেমন হতে হয়
জনপ্রশাসনের চরিত্র কেমন হতে হয়

জনপ্রশাসনের চরিত্র কেমন হতে হয়

‘বেনজীর’ যাদের সৃষ্টি, তারা কি দায় এড়াতে পারেন
‘বেনজীর’ যাদের সৃষ্টি, তারা কি দায় এড়াতে পারেন

‘বেনজীর’ যাদের সৃষ্টি, তারা কি দায় এড়াতে পারেন

উদ্বেগজনক ডেঙ্গু পরিস্থিতি
উদ্বেগজনক ডেঙ্গু পরিস্থিতি

উদ্বেগজনক ডেঙ্গু পরিস্থিতি

খোশ আমদেদ মাহে রমজান : কৃচ্ছ্রসাধন ও আত্মসংযমের মাস
খোশ আমদেদ মাহে রমজান : কৃচ্ছ্রসাধন ও আত্মসংযমের মাস

খোশ আমদেদ মাহে রমজান : কৃচ্ছ্রসাধন ও আত্মসংযমের মাস

দ্রব্যমূল্যের চাপে দিশেহারা মানুষ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হবে
দ্রব্যমূল্যের চাপে দিশেহারা মানুষ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হবে

দ্রব্যমূল্যের চাপে দিশেহারা মানুষ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হবে